নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন মধ্য আলীপুর এলাকায় বসবাসকারী মোঃ হালিম শেখ (২৫), পিতা-মৃত আঃ রব শেখ নামক একজন রিক্সা চালক সে ভাড়ায় রিক্সা চালিয়ে তার জীবিকা নির্বাহ করতো। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০: টার সময় হালিম যাত্রী বহন করার উদ্দেশ্যে গ্যারেজ থেকে ভাড়াকৃত রিক্সাটি নিয়ে বের হয়। প্রতিদিনের ন্যায় হালিম রাত আনুমানিক ২৩:০০ ঘটিকা মধ্যে গ্যারেজে রিক্সা জমা দিয়ে বাসায় ফিরে যায়। ঐদিন রাত আনুমানিক ১১:৩০ মিনিটে হালিম গ্যারেজ মালিককে ফোন করে জানায় যে, সে একটি যাত্রী নিয়ে কানাইপুর যাচ্ছে ফিরতে দেরি হবে। পরদিন ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখ সকালে হালিমের পরিবারের লোকজন হালিমকে ফোন দিয়ে তার ফোন বন্ধ পায়। পরে সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজখবর নিয়েও হালিমের কোন সন্ধান পাওয়া না গেলে হালিমের “মা” পারুল বেগম (৬৫) ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন যার জিডি নং-১৪৬ তরিখ ০৩/০১/২০২৫ খ্রিঃ। উক্ত জিডি করার পর পুলিশ ও হালিমের পরিবারের লোকজন নিখোজ হালিমকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১১:টার সময় পুলিশ সংবাদ পায় যে, কোতয়ালী থানাধীন গৃহলক্ষীপুর মডেল টাউন এলাকায় আসামিদের ভাড়াটিয়া বসতঘরের দক্ষিণ পাশে লাকড়ী চুলার রান্না ঘরের পিছনে একটি গর্থের মধ্যে আলগা বালু মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে করে পুলিশ স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় উক্ত গর্থ থেকে মাটি সরিয়ে বস্তাবন্দী অবস্থায় একটি লাশ বের করা হয়। উক্ত মৃতদেহের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপানোসহ গলায় ধারালো অস্ত্র দ্বারা জবাই করার চিহ্ন দেখা যায়। পরবর্তীতে হালিমের “মা” উক্ত লাশটি দেখে তার নিখোজ ছেলে হালিমের লাশ বলে শনাক্ত করে। এ সময় আসামিদের রান্না ঘর থেকে ভিকটিম হালিমের ব্যাটারি চালিত রিক্সাটির ব্যাটারি বিহীন বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। উক্ত ঘটনায় মৃত হালিমের “মা” পারুল বেগম (৬৫) তার পরিবারের সাথে পরামর্শ করে বাদী হয়ে ফরিপুর জেলার কোতয়ালী থানায় চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক রিক্সা চালক হালিম হত্যাকান্ডে জড়িত আসামি মোঃ রনি মিয়া (৩৭) ও  সুমি বেগম (২৭) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৩, তাং- ০৬/০১/২০২৫, ধারা-৩০২/২০১/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইলেক্ট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঞ্চল্যকর রিক্সা চালক হালিম হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে অধিনায়ক র‍্যাব-১০ বরাবর একটি অধিযাচনপত্র প্রেরণ করেন। উক্ত অধিযাচনপত্রের ভিত্তিতে র‍্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল উল্লেখিত আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ইং রাত আনুমানিক ০১:০৫ মিনিটে র‍্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা এবং র‍্যাব-১১ এর সহযোগীতায় নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন জামদানী তারাবো এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। হত্যাকান্ডে জড়িত এজাহারনামীয় পলাতক প্রধান আসামি মোঃ রনি মিয়া (৩৮), পিতা-আব্দুল মতিন, সাং-খলাপাড়া, থানা-রায়পাড়া, জেলা-নরসিংদী’কে গ্রেফতার করে।